,

কোটালীপাড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগ

আহত শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার

কোটালীপাড়া প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। তিনি কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের মহেন্দ্রলাল হালদারের ছেলে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার কোটালীপাড়ার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সবুজ ঘরামী শ্রেণি কক্ষের বেঞ্চে দাগ দেয়ার অপরাধে গনিত শিক্ষক আশীষ চন্দ্র বড়াল তাকে পিটিয়ে আহত করে।

আহত ওই শিক্ষার্থীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে সবুজ ঘরামীর পরিবারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার ছাত্র সবুজ ঘরামীর পরিবারকে চেপে যেতে বলেন। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা রাণী মন্ডকে ঘটনাটি সবুজ ঘরামীর পিতা সুশীল ঘরামী জানায়।

পরে চেয়ারম্যানের পরামর্শে এ ব্যাপারে সুশীল ঘরামী কোটালীপাড়া থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ধারাবাশাইল বাজারে শত শত মানুষের সামনে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈকে প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাই গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার অকথ্য ভাষায় গালিগালাচ করেন। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর ভাই মনি বাড়ৈর সাথে শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারপরই অমূল্য রতন কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ তার ভাই মনিকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মারপিট করে আমার কপালে তার পায়ের স্যান্ডেল লাগিয়ে বলে’ তুই আমার স্যান্ডেলেরও যোগ্য না। বেশী বাড়াবাড়ি করলে তোকে ও তোর ভাইকে দেখে নেব।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষক অমূল্য হালদারকে মারধর করিনি। বাজারে ২শ’ মানুষের সামনে অমূল্য হালদার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমার মা-বাপ তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় আমার ভাই মনির সাথে তার একটু হাতাহাতি হয়। অমূল্য রতন হালদার শিক্ষক হলেও এলাকায় একজন খারাপ প্রকৃতির মানুষ হিসেবে পরিচিত। তারা এলাকার আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন কয়েক মাস আগে থানায় জিডি করেছে।

এছাড়া অমূল্য রতন হালদারের ভাই মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার উচ্চ বিদ্যালয়টিকে দূর্নীতি আখড়ায় পরিণত করেছে। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার স্ত্রী রীনা রাণী মন্ডল এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষক দুই ভাই আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এখন শিক্ষক আশীষ বড়ালকে বাঁচাতে তারা এ নাটক সাজিয়ে অমূল্য রতনকে হাসপাতালে ভর্তি করে থানায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এ ছাড়াও তারা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করছে। তদন্তে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে আনিত শিক্ষকের অভিযোগের কোন সত্যতা পাবে না।

মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি তার ক্ষমতাবলে এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছে।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, দু’ পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর